আরও একটাবার টেলএন্ডারদের নিয়ে জাকের আলীর সংগ্রামের দৃশ্য দেখতে হলো বাংলাদেশকে। টপঅর্ডারে বড় রান না থাকার পর নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটি, মিডল অর্ডারে বাকিদের ব্যর্থতা আর শেষে জাকেরের প্রতিরোধ– সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের সারাংশ মোটাদাগে এমনই। চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ সবমিলিয়ে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৭১ রান।
শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন জাকের আলী অনিক। থেমেছেন ৫৮ রান করে। বাংলাদেশ অলআউট হলো ২৫৫ রানে। লিড ১৭৩ রানে। সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে জয় পেতে জিম্বাবুয়ের দরকার ১৭৪ রান।
বৃষ্টি বাগড়ার পর চতুর্থ দিনে স্বাগতিকরা ব্যাট হাতে কোনোপ্রকারেই সুবিধা করতে পারেনি। দিনের প্রথম ৭ ওভারেই হারিয়েছে ৩ উইকেট। দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর তারই দেখানো পথে হেঁটেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং তাইজুল ইসলাম। এর মাঝে মিরাজ এবং তাইজুল ফিরেছেন মোটে ৮ বলের ব্যবধানে।
আগেরদিনের সঙ্গে নতুন করে রান যোগ করার আগেই অধিনায়ক শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় বলেই পুল শটে খেলতে চেয়েছিলেন। তবেঠিকমতো টাইমিং হয়নি, ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় লং লেগে। অনেকটা দৌড়ে এসে বেশ ভালো একটা ক্যাচ নেন নিয়াগুচি। মিরাজও আউট হয়েছেন মুজারাবানির বলেই।
আজও ক্রিজে এসে লম্বা সময় থাকা হয়নি মিরাজের। ১৬ বল খেলেে ১১ রানে মুজারাবানির শর্ট লেন্থের বলে গালিতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। লিডের খাতায় ১৮ রান যোগ করতেই দুই উইকেট মুজারাবানির দখলে। মুজারাবানির দেখাদেখি উইকেট পেয়েছেন এনগারাভাও। তাইজুল ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটকিপার মায়াভোকে।
প্রথম ইনিংসের মতোই এরপর হাসান মাহমুদকে নিয়ে জাকেরের প্রতিরোধের চেষ্টা। দুজনের জুটিটা টিকেছিল ৯১ বল পর্যন্ত। তাতে স্কোরবোর্ডে যুক্ত হয় ৩১ রান। লিড ১৫০ ছাড়িয়ে যায় ওই জুটির কল্যাণেই। কিন্তু ওয়েলিংটন মাসাকাদজার করা ৭৮তম ওভারে বাংলাদেশ হারায় দুই উইকেট। চতুর্থ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড অফে মুজারাবানিকে ক্যাচ দেন হাসান মাহমুদ। পরের বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন খালেদ আহমেদ।
শেষ ব্যাটার হিসেবে এসেছিলেন নাহিদ রানা। তাকে নন স্ট্রাইকে রেখে আগ্রাসী হওয়ার ভাবনা ছিল জাকেরের। তবে সেই প্রচেষ্টা থামলো ৫ বলে ৭ রান যোগ করার পরেই। দ্বিতীয় ইনিংসে মুজারাবানির ৬ষ্ঠ শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন জাকের আলী অনিক। জিম্বাবুয়ে পেয়ে যায় ১৭৪ রানের ছোটখাটো লক্ষ্য।
অবশ্য পুরো টেস্টেই বাংলাদেশের ওপর খানিক চেপে বসেছিল জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছিল ১৯১ রান। একমাত্র মুমিনুল হকের ৫৬ রান ছাড়া বলার মতো সংগ্রহ ছিল না কারোরই। জবাবে ব্রায়ান বেনেট এবং শন উইলিয়ামসের ব্যাটে চড়ে লিড পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। শেষ দিকে এনগারাভার ২৮ এবং মুজারাবানির ১৭ রানের সুবাদে ৮২ রানের একটা লিড পেয়েও যায় জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দলীয় ১৩ রানেই হারায় সাদমান ইসলামের উইকেট। এরপর জয়-মুমিনুল জুটি স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৪৪ রান। শান্ত পরবর্তীতে ফিফটি পেয়েছেন। লিড উঠেছিল ১১২ রান পর্যন্ত। কিন্তু চতুর্থ দিনে এসে ব্যাটিং ব্যর্থতার সেই পুরাতন গল্প ম্যাচের লাগাম তুলে দিল জিম্বাবুয়ের কাছে।
খুলনা গেজেট/এনএম